ইউক্রেনে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশন পাঠানো প্রয়োজন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মার্চ ১৬, ২০২২, ০৯:২০ পিএম

ইউক্রেনে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশন পাঠানো প্রয়োজন

রাশিয়ার আগ্রাসন মোকাবিলায় ইউক্রেনে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশন পাঠানো প্রয়োজন বলে মনে করে পোল্যান্ড, চেক প্রজাতন্ত্র ও স্লোভেনিয়া। গতকাল মঙ্গলবার ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সাথে বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়নভূক্ত ওই তিন দেশের প্রধানমন্ত্রীরা অংশগ্রহণ করেন। বৈঠক শেষে পোল্যান্ডের উপপ্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের দাবি তোলেন। এসময় অন্য দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী এ দাবির প্রতি সমর্থন জানান।     

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে তীব্র সংঘাতের মধ্যেই কিয়েভে যেয়ে ইউক্রেনিয়দের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন পোল্যান্ড, চেক প্রজাতন্ত্র ও স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রীরা।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ভয়াবহ যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেই ট্রেনযোগে কিয়েভ আসেন পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মোরাভিয়েৎস্কি, চেক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী ফিয়ালা এবং স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী জানসা। তারা  দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করেন।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট এই তিন নেতাকে বলেন, “আপনার ইউরোপীয় ইউনিয়নকে জানান রুশ হামলা আতঙ্ক নিয়ে ভয়াবহ পথ অতিক্রম করছেন লাখ লাখ শরণার্থী। বন্ধুপ্রতীম প্রতিবেশীর সমর্থন থাকলে আমাদের লড়তে কোনো সমস্যা নেই। এ সফর প্রমাণ করে কিয়েভের প্রতিরোধের ব্যাপারে কতোটা সমর্থন রয়েছে ইইউ’র।”

এদিকে, তিন সরকার প্রধান কিয়েভের সফরকে ইইউ’র মিশন হিসেবে আখ্যা দিলেও সেটি স্বীকার করছে না ইউরোপীয় ইউনিয়ন জোট। এক বিবৃতিতে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে এটি তাদের ব্যক্তিগত সফর।

ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের শুরু থেকেই ক্রেমলিনের কঠোর সমালোচনা করে পোল্যান্ড। ইউক্রেন থেকে দেশটির পালিয়ে যাওয়া নাগরিকদের বড় অংশ আশ্রয় নিয়েছেন প্রতিবেশি এই দেশটিতে।

পোল্যোন্ডের প্রধানমন্ত্রী মোরাভিয়েৎস্কি সামাজিক মাধ্যমে ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, “এখানে,এই যুদ্ধবিধ্বস্ত কিয়েভে, ইতিহাস তৈরি হচ্ছে। এখানেই স্বাধীনতা সংগ্রামীরা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়ছেন। আমাদের ভবিষ্যৎ একটা সরু সুতোর উপর ঝুলছে।''

তবে পোল্যান্ডের উপ-প্রধানমন্ত্রী কাচয়েনস্কি দাবি করেছেন, ইউক্রেনে একটি আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। তিনি বলেন, ''আমি মনে করি, ইউক্রেনে একটা শান্তি মিশন জরুরি। ন্যাটোর একটা আন্তর্জাতিক কাঠামো আছে। এই বাহিনীর নিজেদের রক্ষা করার ক্ষমতা থাকবে এবং তা ইউক্রেনের মাটিতে দাঁড়িয়ে কাজ করবে।''

এদিকে, ইউক্রেনে হামলার ২১তম দিনে দেশটির বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার যুদ্ধবিমান আর ট্যাংক থেকে অনবরত গোলা আর বোমা বর্ষণ হচ্ছে ।

বিবিসি’র খবরে বলা হয়, মারিউপোলে বড় একটি ভবনের বেজমেন্টে আটকে আছেন শত শত মানুষ। সেখানে তীব্র খাদ্য সংকটের পাশাপাশি দরকার হয়ে পড়েছে জরুরি স্বাস্থ্য সেবা।

সংক্রমণের কারণে অনেকের শরীরে পচন ধরেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় একজন শিক্ষক আনাসতাসিয়া পনমারেভা। যুদ্ধের শুরুতেই শহর ছাড়লেও শহরে থাকা অনেকের সাথে তার যোগাযোগ আছে বলে জানিয়েছেন তিনি। "পরিস্থিতি অত্যন্ত মারাত্মক," বলেন তিনি।

অপরদিকে, প্রায় দু হাজার গাড়ি মানবিক করিডোর দিয়ে মারিউপোল ছাড়ার সুযোগ পেয়েছে। যুদ্ধের আগে চার লাখ মানুষ শহরটিতে বাস করতো। সিটি কাউন্সিল বলছে অন্তত দু হাজার মানুষ এরই মধ্যে মারা গেছে।

Link copied!